পরিসংখ্যান

গড়ের ক্ষেত্রে যথার্থতা যাচাই

একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণি - পরিসংখ্যান - পরিসংখ্যান ২য় পত্র | NCTB BOOK

গড়ের ক্ষেত্রে যথার্থতা যাচাই:

গড় (Mean) পরিসংখ্যানের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাপনী, যা ডেটার কেন্দ্রীয় প্রবণতা বোঝায়। তবে, গড়ের যথার্থতা যাচাই করতে হলে ডেটার সঠিকতা, নির্ভুলতা এবং প্রকৃত মানের সাথে সামঞ্জস্যতা যাচাই করতে হয়। নিচে গড়ের যথার্থতা যাচাইয়ের বিভিন্ন দিক তুলে ধরা হলো:


১. গড়ের ত্রুটি (Error in Mean):

গড়ের ক্ষেত্রে যথার্থতা যাচাই করতে ডেটার প্রকৃত গড়ের সাথে পরিমাপকৃত গড়ের পার্থক্য নির্ণয় করা হয়।

ত্রুটির সূত্র:
\[
\text{Mean Error} = |\bar{X}{observed} - \bar{X}{true}|
\]
যেখানে,
\(\bar{X}{observed}\) = প্রাপ্ত গড়
\(\bar{X}{true}\) = প্রকৃত গড়


২. গড় আপেক্ষিক ত্রুটি (Mean Absolute Error - MAE):

গড়ের ক্ষেত্রে সমস্ত মানের গড় আপেক্ষিক ত্রুটি পরিমাপ করে গড়ের যথার্থতা যাচাই করা হয়।

সূত্র:
\[
\text{MAE} = \frac{\sum_{i=1}^{n} |X_i - \bar{X}|}{n}
\]
যেখানে,
\(X_i\) = ডেটার মান
\(\bar{X}\) = প্রাপ্ত গড়
\(n\) = ডেটার মোট সংখ্যা


৩. গড়ের গড় বর্গমূল ত্রুটি (Root Mean Square Error - RMSE):

গড়ের যথার্থতা যাচাইয়ের আরেকটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হলো RMSE। এটি ত্রুটির স্কোয়ারের গড়ের বর্গমূল নির্দেশ করে।

সূত্র:
\[
\text{RMSE} = \sqrt{\frac{\sum_{i=1}^{n} (\bar{X} - X_i)^2}{n}}
\]


৪. গড়ের স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন (Standard Deviation):

গড়ের মান থেকে প্রতিটি ডেটার বিচ্যুতি পরিমাপ করে ডেটার সঠিকতা যাচাই করা হয়। যদি স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন কম হয়, তাহলে গড়টি বেশি সঠিক।

সূত্র:
\[
\sigma = \sqrt{\frac{\sum_{i=1}^{n} (X_i - \bar{X})^2}{n}}
\]


৫. সহগ বিচ্যুতি (Coefficient of Variation - CV):

গড়ের বিচ্যুতি যাচাই করতে CV ব্যবহার করা হয়, যা গড়ের তুলনায় ডেটার বৈচিত্র্য নির্দেশ করে।

সূত্র:
\[
\text{CV} = \frac{\sigma}{\bar{X}} \times 100
\]
যেখানে,
\(\sigma\) = স্ট্যান্ডার্ড ডেভিয়েশন
\(\bar{X}\) = গড়


৬. শতকরা ত্রুটি (Percentage Error in Mean):

গড়ের ক্ষেত্রে শতকরা ত্রুটি ব্যবহার করে গড়ের যথার্থতা সহজে যাচাই করা যায়।

সূত্র:
\[
\text{Percentage Error} = \frac{|\bar{X} - \bar{X}{true}|}{\bar{X}{true}} \times 100%
\]


৭. নমুনার আকারের প্রভাব (Effect of Sample Size):

যদি নমুনার আকার বৃদ্ধি করা হয়, তবে গড়ের মান প্রকৃত মানের কাছাকাছি আসে। সুতরাং, যথার্থতা যাচাইয়ের ক্ষেত্রে বড় নমুনা ব্যবহার করাও গুরুত্বপূর্ণ।


উদাহরণ:

ধরা যাক, একটি ডেটাসেট থেকে গড় নির্ণয় করা হয়েছে \( \bar{X} = 50 \), এবং প্রকৃত গড় \( \bar{X}_{true} = 48 \)।
তাহলে:

  • Mean Error: \( |50 - 48| = 2 \)
  • Percentage Error: \( \frac{2}{48} \times 100 = 4.17% \)

এটি নির্দেশ করে যে গড়টি প্রকৃত মানের সাথে প্রায় ৪.১৭% বিচ্যুত।


উপসংহার:
গড়ের যথার্থতা যাচাই করতে বিভিন্ন পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি ব্যবহৃত হয়, যা ডেটার মান ও ত্রুটির প্রকৃতি বুঝতে সাহায্য করে। যথার্থ গড় নির্ণয়ের জন্য ত্রুটি নির্ণয়, বড় নমুনা ব্যবহার, এবং ডেটার বৈচিত্র্য নিয়ন্ত্রণ করা অপরিহার্য।

Promotion